ভ্রমণ/ঘোরাঘুরি

প্রথম দেশের বাইরে ভ্রমণ অভিজ্ঞতাঃ ঢাকা টু দিল্লি

Last updated on June 3rd, 2020 at 08:03 pm

প্রথমেই বলে নেই, এটা একান্তই আমার ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা। আমার বর্ণনার সাথে অন্য কারও না-ও মিলতে পারে।

আমি ১৩ ডিসেম্বর ২০১৫ ইং – তে ভারতের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করি। ১৩ ডিসেম্বর রাত ৯ টার দিকে আমি কল্যাণপুর বাস স্ট্যান্ড পৌঁছাই। সেখানে গিয়ে কয়েকটা বাস কাউন্টার ঘুরে শেষে সোহাগ পরিবহনের নন – এসি টিকেট কাটি। কয়েকটা বাস কাউন্টার ঘুরে যা দেখলাম সব বাসেই একই ভাড়া (এসি/নন-এসি)। আমার সময় (ঢাকা থেকে বেনাপোল) এসি ভাড়া ছিল ১১০০ টাকা এবং নন – এসি ৫৫০ টাকা।

kollyanpur-bus-stand
কল্যাণপুর বাস স্ট্যান্ড

রাত ১১ টার দিকে বাস ছাড়ল। কিছুক্ষন পরে আমি ঘুমিয়ে পড়ি। বাস চলছে তার আপন গতিতে আমি ঘুমাচ্ছি আমার আপন প্রশান্তে। অবশ্য বেশিক্ষণ ঘুমাই নি। প্রায় ৩ – ৫ ঘণ্টা চলার পর বাস আরিচা ফেরি ঘাট (খুব সম্ভবত – এই মুহূর্তে নামটা ঠিক মনে নেই) পৌঁছে। ঘন কুয়াশার কারণে ওখানেই অনেকটা দেরি হয়। যাই হোক, ১৪ ডিসেম্বর সকাল ৭ – ৮ টার দিকে বাস বেনাপোল পৌঁছায়। বাস থেকে নেমে সাথে নিয়ে যাওয়া কিছু আপেল, কমলা, কলা এবং রুটি খাই। তারপর সেখান থেকে ভ্যানে (খুব সম্ভবত – আসলে অনেক আগে গিয়েছিলাম তাই ঠিক মনে পড়ছেনা) করে বেনাপোল কাস্টমসে/বর্ডারে যাই।

বেনাপোল কাস্টম হাউস
বেনাপোল কাস্টম হাউস

প্রধান ফটক দিয়ে ঢুকে কর্তব্যরত পুলিশ এর কাছ থেকে ফর্মালিটিসগুলো জেনে নেই। সোনালী ব্যাংকে ৫০০ টাকা ব্যাংক ড্রাফ্‌ট করে রশিদ নিয়ে সোজা ভিতরে চলে যাই। আপনারা ভুলেও ওখানকার কাউকে দিয়ে কোন কিছুই করবেন না, সবকিছু নিজে নিজেই করবেন। বর্ডার ক্রস করে যে এলাকা শুরু মানে ভারতের সীমানা শুরু সে এলাকার নাম হচ্ছে হরিদাসপুর, সেখান থেকে আমি বাংলাদেশী টাকা ও ডলারগুলা রুপিতে করে নেই, তারপর সিএনজি স্ট্যান্ড থেকে একটা সিএনজি ভাড়া করে চলে যাই বনগাঁও রেল স্টেশন (প্রকৃত নামঃ বনগাঁও জংশন)।

বনগাঁও জংশন
বনগাঁও জংশন

সেখান থেকে দমদম রেল স্টেশন – কলকাতা রেল স্টেশন বললেও হবে (প্রকৃত নামঃ দমদম জংশন) এর টিকেট কাটি, ১৫ রুপি নিয়েছিল আমার কাছে। দমদম রেল স্টেশন থেকে সিএনজি ভাড়া করে সোজা নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ( কলকাতা বিমানবন্দর )।

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (কলকাতা বিমানবন্দর)
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (কলকাতা বিমানবন্দর)

বিমানবন্দরে ঢুকে কর্তব্যরত আইনের লোককে জিজ্ঞেস করে নির্দিষ্ট কাউন্টার থেকে জেট এয়ার এর টিকেট কাটি (প্রায় ৭৯০০ রুপি লেগেছিল), ফ্লাইট ছিল বিকেল ৫ঃ৩০ মি. এর দিকে। নির্দিষ্ট সময় প্লেইনে উঠি। প্রথম প্লেইন ভ্রমণ অনেক ভাল লাগার মাঝে কিছুটা ভয় ও করছিল, যখন জানালা দিয়ে বাইরে/নিচের দিকে তাকাইলাম, ভাগ্যক্রমে আমার সিটটা জানালার পাশেই পড়েছিল। ঠিক আড়াই ঘণ্টা (২ ঘণ্টা ৩০ মিঃ) পর প্লেইন দিল্লি ল্যান্ড করে।

ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, দিল্লি (ইন্টারন্যাশনাল ডিপারচার সেকশন)
ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, দিল্লি (ইন্টারন্যাশনাল ডিপারচার সেকশন)

বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে একটা সিএনজি ভাড়া করে ( ভাড়াঃ ২০০ – ২৫০ রুপি ) আরকাশান রোড, পাহাড়গঞ্জ, দিল্লি (হোটেল কুয়ালিটি – Hotel Kwality) যাই।

Hotel Kwality
Hotel Kwality

২/৩ দিন থাকার পর আমার প্রাণের দেশ বাংলাদেশের পথে রউনা হই। আমি শিয়ালদাহ রাজধানী’র টিকেট কেটেছিলাম। প্রায় ৩১০০ রুপি’র মত লেগেছিল। ট্রেনের ভিতরেই নাস্তার ও হাল্কা খাবারের ব্যবস্থা থাকে সেটা আগেই জানা ছিল, তাই বাইরে থেকে কোন খাবার কিনি নাই। ট্রেন বিকাল ৪ঃ৩০ মি. এর দিকে দিল্লি ছাড়ল। প্রায় ১৮ ঘণ্টা ভ্রমনের পর শিয়ালদাহ সকাল ১০ টার দিকে। সেখান থেকে ট্রেন ধরে সোজা বনগাঁও জংশন। সেখান থেকে ইমিগ্রেশন এর কাজ শেষ করে বেনাপোল বাস স্ট্যান্ড থেকে সোহাগ এর একটা এসি টিকেট কাটি। তারপর বাড়িতে ফিরে আসি।


ভ্রমণকালঃ ১৩ ডিসেম্বর ২০১৫ – ১৯ ডিসেম্বর ২০১৫

ছবিঃ গুগল

মূল লেখা

অভিজ্ঞতাঃ মেহেদী হাসান

ফেসবুক মন্তব্য
Mahedi Hasan
 
শেয়ার করুনঃ

Mahedi Hasan

স্বপ্নবাজ ও ভ্রমণপিপাসু একজন মানুষ। নতুন কিছু জানতে ও শিখতে ভালো লাগে। নিজে যা জানি তা সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। বর্তমানে জার্মানিতে পড়াশোনা করছি।আমার সম্পর্কেঃ http://www.hmahedi.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 3 =

Upcoming Events