উচ্চশিক্ষালিথুয়ানিয়া

লিথুয়ানিয়া সমাচার

Last updated on June 3rd, 2020 at 08:02 pm

লাবাছ!! লেখার শুরুতেই একটি লিথুয়ানিয়ান শব্দের প্রয়োগ ঘটালাম যার ইংরেজি মিনিং হাই!! বাহ আমি তো দেখছি ভালই লিথুয়ানিয়ান ভাষা জানি!!! কিন্তু না ব্যাপারটা আসলেই যতটা বলা সহজ ততটা রপ্ত করা সহজ নয়। তবে হ্যাঁ সবার কাছে ব্যপারটা কঠিন না ও লাগতে পারে কারন সবাই তো আমার মতো নয়।কিছু অপ্রাসঙ্গিক কথা দিয়ে না হয় লেখাটা শুরু হলো। কিন্তু লিখতে তো বসলাম অনেক দিন পর, লেখা টা কি শেষ করতে পারবো?!! না আজ লেখাটা শেষ করেই ফেলি।কেননা লেখাটির মাধ্যমে হয়তো আমার দেশ এর অনেক শিক্ষার্থীর কিছু উপকার হতে পারে। ও হ্যাঁ আমিতো এখনো অপ্রাসঙ্গিক কথা ছাড়তে পারলাম না…
এইবার মূল প্রসঙ্গে আসি…
লিথুয়ানিয়া পশ্চিম ইউরোপের বাল্টিক সাগরের তীর এর একটি সুন্দর দেশ যার আয়তন ৬৫,৩০০ বর্গকিলোমিটার এবং জনসংখ্যা প্রায় ২.৯ মিলিয়ন। লিথুয়ানিয়া সেঞ্জেনভুক্ত দেশ হিসেবে ২০০৪ সালে ইউ তে যোগদান করে। ২০১৫ সাল থেকে লিথুয়ানিয়াতে ইউরো এর যাত্রা শুরু হয়। লিথুয়ানিয়া এর রাজধানী এর নাম ভিলনিয়াস।লিথুয়ানিয়া তার বর্ডার শেয়ার করেছে লাটভিয়া,পোল্যান্ড, বেলারুশ ও রাশিয়া এর সাথে।লিথুয়ানিয়া এর মানুষ এর মাথা পিছু গড় আয় ১৫, ৮৩৮ ইউএস ডলার।
বাংলা রচনা এর মত করে লেখাটা এগিয়ে যাচ্ছে। লেখাটা দেখলে যে কেউ ভাববে পরিক্ষায় মার্ক্স পাওয়ার জন্য লিখছি হা হা…
খুব সম্ভবত ২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশ থেকে লিথুয়ানিয়াতে শিক্ষার্থী আসা শুরু করেছে। প্রথম বছর এ সংখ্যাটা ৫ এর কম থাকলেও দিন যাওয়ার সাথে সাথে সংখ্যাটাও কয়েক গুন বৃদ্ধি পেয়েছে ২০১৭ এর স্প্রিং সেশন পর্যন্ত । বাংলাদেশ এর শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার জন্য প্রথম পছন্দ আমেরিকা,কানাডা,ইউকে, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। তারপরেই রয়েছে উওর ইউরোপিয়ান ও নরডিক দেশগুলো । যার মধ্যে অনেক দেশে নানাবিধ জটিলতা রয়েছে যেমন রিকয়ারমেন্টস,টিউশন ফিস, ইংলিশ মিডিয়াম এর অপ্রাচুর্যতা এবং ভিসা জটিলতা। বিশেষ করে ব্যাচেলর লেভেলে রিকয়ারমেন্টস ফুলফিল করাটাই কঠিন। তাই বর্তমানে বাংলাদেশের স্টুডেন্টদের কাছে পশ্চিম ইউরোপ এর দেশগুলো অগ্রাধিকার পাচ্ছে শুধুমাত্র রিকয়ারমেন্টস ও ভিসা জটিলতা কম থাকার কারনে। এই দেশগুলোর মধ্যে লিথুয়ানিয়াতে বর্তমানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী পড়াশুনার জন্য আসে। ইউরোপ এর মধ্যে বিনা বেতনের পড়াশুনার দেশগুলোর পরে লিথুয়ানিয়া এর পড়াশুনার খরচ তুলনামুলক ভাবে অনেক কম এবং বর্তমানে প্রায় প্রত্যেকটি রেপুটেড ইউনিভার্সিটিতেই ইংলিশ মিডিয়াম চালু রয়েছে। ইউরোপের অন্যান্য দেশ এর তুলনায় লিথুয়ানিয়ার লিভিং এক্সপেনস ও অনেক কম। লিথুয়ানিয়ায় বর্তমানে অনেকগুলো পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে ইংলিশকোর্স চালু রয়েছে যার মধ্যে ইঞ্জিনিয়ারিং,ব্যবসা,আর্টস সহ প্রায় প্রত্যেকটি কোর্সের ই স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী চালু রয়েছে।বাংলাদেশ থেকে যারা ব্যাচেলর করতে লিথুয়ানিয়া আসতে চাচ্ছেন তাদেরকে নূন্যতম উচ্চমাধ্যমিক/সমমান পাস হতে হবে। লিথুয়ানিয়াতে পড়াশুনা এর জন্য আপনার একাডেমিক কোয়ালিফিকেসন লিথুয়ানিয়ার সেন্টার ফর কোয়ালিটি এসেসমেন্ট ইন হাইয়ার এডুকেশন (SKVC) থেকে রিকোগনাইজ করাতে হবে যার জন্য আপনার সকল একাডেমিক সার্টিফিকেট ও মার্কসিট (ব্যাচেলর লেভেল এর জন্য এসএসসি ও এইচএসসি এর সার্টিফিকেট ও মার্কসিট এবং মাস্টার্স লেভেল এর জন্য ব্যাচেলর লেভেল এর সার্টিফিকেট ও মার্কসিট) ও পাসপোর্ট এর ফটোকপি নোটারি করে এবং এসকেভিসি ফরম (ফরম টি পাওয়া যাবে http://www.skvc.lt/default/en/60/apply/documentation_requirements) পূরন করে আপনার ইমেইল অ্যড্রেস উল্লেখপূর্বক নিম্নোক্ত A Gostauto g.12 Vilnius 01108; Phone:(8-5)2104772 এই ঠিকানায় কুরিয়ার যোগে পাঠাতে হবে। এই রিকগনিশন এর জন্য skvc কর্তৃপক্ষ ২১ কর্ম দিবস সময় নিয়ে থাকে। বর্তমানে ২০১৭ সালের এপ্রিল মাস থেকে নতুন নিয়মে আপনাকে skvc এসেসমেন্ট করার পূর্বেই ইউনিভার্সিটিতে অ্যাপ্লাই করতে হবে এবং উপরিউক্ত ডকুমেন্ট এর সাথে আপনাকে অবশ্যই প্রুফ অব পারপোস ডকুমেন্ট ও পাঠাতে হবে। ব্যাপারটা একটু জটিল মনে হচ্ছে হয়ত অনেকের কাছে তাই একটু সহজ করে বলা উচিত।
ডকুমেন্ট চেকলিস্ট ফর SKVC
1.photocopy of certificate & marksheet of HSC & SSC (For Bachelor studies)
2.Photocopy of Certificate & Marksheet of Bachelor level (For masters studies)
3.Photocopy of Passport (Biometric pages only)
4.Proof of Purpose
All these documents must be notarised.
এইবার আসি প্রুফ অব পারপোস প্রসঙ্গে
আবেদনকারিকে অবশ্যই skvc অথরিটিকে একটি ডকুমেন্টস প্রদান করতে হবে যেটা কিনা প্রমান করে আপনি লিথুয়ানিয়া এর একটি ইউনিভার্সিটিতে আবেদন করেছেন এবং ঐ ইউনিভার্সিটি আপনাকে কন্ডিশনাল্লি এক্সেপট করেছে। অাপনি চাইলে আপনার এই ডকুমেন্ট টা আপনার ইউনিভার্সিটির মাধ্যমে enicnaric@skvc.lt এই এড্রেসে ইমেইল করতে পারবেন তবে তা অবশ্যই ইউনিভার্সিটি এর অফিসিয়াল ইমেইল এড্রেস থেকে পাঠাতে হবে। অথবা উপরেউল্লেখিত কাগজগুলোর সাথে কুরিয়ার করে পাঠাতে পারবেন।আপনি যখন ইউনিভার্সিটি তে এপ্লিকেশন করবেন এবং অফার লেটার পাবেন তখন ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ আপনাকে পরবর্তী করনীয় বলে দিবে এটা নিয়ে চিন্তার কোনো কারন নেই।
এইবার ইউনিভার্সিটিগুলোর কিছু রিকয়ারমেন্টস নিয়ে কথা বলা যাক…
লিথুয়ানিয়াতে সব ইউনিভার্সিটিতে আবেদন এর জন্য আইইলটিএস বাধ্যতামূলক নয়। তবে রেপুটেড এবং ওয়ার্লড র‍্যান্কড ইউনিভার্সিটিতে আবেদন এর জন্য ইংলিশ প্রফিসিএনসি দক্ষতা নুন্যতম বি২ লেভেল থাকতে হবে। রিকয়ারমেন্টস এর জন্য ইউনিভার্সিটি এর ওয়েবসাইট চেক করা উচিত। ইউনিভার্সিটিগুলো সাধারনত আবেদনকারীর একটি মোটিভেশনাল ইন্টারভিউ নিয়ে থাকে স্কাইপ অথবা ভয়েস কলের মাধ্যমে। লিথুয়ানিয়াতে টিউশন ফিস ইউনিভার্সিটি ভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে তবে ব্যাচেলর লেভেলে টিউশন ফিস গড়ে ১৩০০-৩৫০০ ইউরো পার ইয়ার এবং মাস্টার্স লেভেলে গড়ে ২৫০০-৪৫০০ ইউরো পার ইয়ার। প্রায় প্রত্যেকটি ইউনিভার্সিটিতেই টিউশন ফিস ভিসা আবেদনের পূর্বে পাঠিয়ে দিতে হয়।যদি ভিসা রিফিউজ হয় তবে ইউনিভার্সিটি টিউশন ফিস রিফান্ড করে দেয়(অবশ্যই ইউনিভার্সিটির টার্মস এন্ড পলিসি অনুযায়ী)।প্রত্যেকটি ইউনিভার্সিটিতে আবেদনের সময় অ্যপ্লিকেসন ফিস দেয়া লাগে।অ্যপ্লিকেসন ফিস সাধারনত গড়ে ৩৫-২০০ ইউরো।লিথুয়ানিয়াতে ইউনিভার্সিটি এর পাশাপাশি কিছু ভালো স্টেট ইউনিভার্সিটি অব এপ্লাইড সাইন্স (কলেজ) রয়েছে যেখানে ও অনেক ভাল সাবজেক্টে পড়াশুনার সুযোগ রয়েছে।
এইবার লিভিং এক্সপেন্স নিয়ে আলোচনা করি…
আপনি লিথুয়ানিয়াতে খুব কম খরচেই থাকতে পারবেন। থাকার জন্য ইউনিভার্সিটিগুলোতে ডরমিটরি রয়েছে। ডরমিটরিগুলোর চার্জ মাসে ৪৫-২০০ ইউরো। অনেক ইউনিভার্সিটির নিয়ম অনুযায়ী আপনাকে ভিসা পাওয়ার পর আগাম কয়েক মাসের ডর্ম ফিস এবং ডিপজিট ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে থেকে পাঠিয়ে দিতে হবে।
(লিথুয়ানিয়াতে পড়াশুনার যাবতীয় তথ্যের জন্য ভিজিট করুন http://www.studyinlithuania.lt/
যেহেতু বাংলাদেশে লিথুয়ানিয়ার কোনো এম্বাসি নেই তাই আপনাকে একটু কষ্ট করে ইন্ডিয়া গিয়ে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। আপনার জন্য এম্বাসিতে এপইন্টমেন্ট আপনার ইউনিভার্সিটি থেকে বুক করে দিবে।ইন্ডিয়াতে লিথুয়ানিয়ান এম্বাসিটি নয়াদিল্লীতে অবস্থিত। এম্বাসির ঠিকানা C-93 Anand Niketon,New Delhi,Delhi 110021,India.(এম্বাসির ওয়েবসাইট https://in.mfa.lt/in/en/)
এম্বাসির ডকুমেন্টস চেকলিস্ট:
১.কম্পলিট ভিসা ফর্ম।
২.ছবি ১ কপি ৩৫x৪৫ রঙিন(সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড)।
৩.পাসপোর্ট
৪.হেল্থ ইনসুরেন্স। মেডিকেল কভারেজ হতে হবে ৩০,০০০ ইউরো।(আমার সাজেসন্স হলো swisscare থেকে কিনা কেননা এইটা অনলাইন থেকে কেনা যায় এবং অনেক সস্তা। আবার ভিসা রিফিউজ হলে টাকা রিফান্ড করে দিবে।
৫.ইউনিভর্সিটি কর্তৃক প্রদানকৃত ডকুমেন্টস।
৬.ব্যাংক স্টেটমেন্ট সর্বনিম্ন ৬-৭ লক্ষ টাকা। ব্যাংক স্টেটমেন্ট যদি কারো প্যারেন্টস এর একাউন্ট থেকে দেখানো হয় তাহলে একটি এফিডেভিট করা ভালো যেখানে উল্লেখ থাকবে যে যিনি স্পন্সর তিনি আপনাকে টাকা দিচ্ছেন এবং তার আয়ের উৎস উল্লেখ থাকবে। ব্যবসায়ী হলে ট্রেড লাইসেন্স ট্রান্সলেট করে দিতে পারেন।
৭.কনফার্ম রিজার্ভেশন সহ একটি বিমান টিকিট দিতে হবে। টিকিটটি কিনা লাগবে না শুধুমাত্র রিজার্ভেশন দিবেন এবং টিকিটির ইটিরিনারিতে অবশ্যই এবং অবশ্যই স্ট্যাটাস হতে হবে কনফার্মড(confirmed)
***এম্বাসিতে আপনাকে কোনো ফিস প্রদান করা লাগবে না***
লিথুয়ানিয়ান এম্বাসি সাধারনত ভিসা ডিসিসন ইন্টারভিউ এর পরের ১৪ দিন এর মধ্যে দিয়ে থাকে। এই ১৪ দিন আপনাকে ইন্ডিয়াতেই থাকতে হবে। ইন্ডিয়ার কিছু শহর ঘুরে দেখতে পারেন এই কয়েকদিনে।
এম্বাসিতে আপনাকে কিছু সাধারন প্রশ্ন করা হবে এবং আমার মতে খুব শান্তভাবে প্রশ্নের উত্তরগুলো প্রদানের মাধ্যমে আপনার ইন্টেনশন ক্লিয়ার করতে পারলে এবং সকল ডকুমেন্টস ঠিকঠাক থাকলে ভিসা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই কেননা ভিসা অফিসার আপনার ইন্টেনশন এবং কিছুটা ইংলিশ এর দক্ষতা যাচাই করবে। লিথুয়ানিয়ান এম্বাসি আপনাকে ১ বছর/৬ মাস বা যে কোনো ডিউরেশনের ভিসা প্রদান করতে পারে।
এইবার ভিসা পাওয়ার পর লিথুয়ানিয়া যাওয়ার পালা.. অহ অনেক পরিশ্রম করেছেন এইবার স্বপ্নের ইউরোপে আসার পালা…
যাইহোক ভিসা পাওয়ার পর ইউনিভার্সিটি তে কিন্তু এই খুশির খবরটা জানাতে ভুলবেন না। ইউনিভার্সিটি কে আপনার ফ্লাইট ডেট জানিয়ে দিবেন কেননা ইউনিভার্সিটি থেকে আপনার জন্য এয়ারপোর্ট পিকাপ এর ব্যবস্থা করা হবে এবং আপনার জন্য একজন মেন্টর দেয়া হবে যে কিনা আপনাকে প্রপার গাইড করবে সব সময়।
লিথুয়ানিয়াতে তো চলে আসলেন এইবার লিথুয়ানিয়া এর টেম্পোরারি রেসিডেন্স পারমিট বা সংক্ষেপে টিআরপি (TRP) করাতে তো হবে তাই না?!! তাহলে দেরি না করে চলুন TRP নিয়ে কিছুক্ষন আলোচনা করি…
লিথুয়ানিয়াতে অবস্থানের জন্য আপনাকে অবশ্যই TRP এর জন্য আবেদন করতে হবে। লিথুয়ানিয়া এর TRP প্রথমে সাধারনত ১ বছরের জন্য দিয়ে থাকে তারপর থেকে এক্সটেন্সন করতে হবে। কিন্তু আপনার হয়তবা মনে প্রশ্ন আসতে পারে আমারতো ভিসা আছে তাহলে আমি কখন আবার এই TRP এর জন্য আ্যপ্লাই করবো???
তাই কিছু ব্যাপার ক্লিয়ার হতে হবে।
আপনি TRP এর জন্য কখন আ্যপ্লাই করবেন? আসুন জানি…
ধরেন আপনি ১ বছর এর ভিসা পেলেন তখন আপনাকে আপনার ভিসা শেষ হওয়ার ৪ মাস আগে TRP এর জন্য আবেদন করতে হবে। এক কথায় আপনাকে আপনার ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার ৪ মাস পূর্বে TRP এর জন্য আ্যপ্লাই করতে হবে।(ভিসা আপনি ১ বছর/৬ মাসের পেতে পারেন)
TRP এর জন্য আবেদন করার জন্যও আপনার কিছু ডকুমেন্টস লাগবে:
১.পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট। পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটের মেয়াদ ৬ মাসের পুরাতন হওয়া যাবে না যখন আপনি TRP জন্য আ্যপ্লাই করবেন। এই পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটটি আপনাকে পোল্যান্ডে অবস্থিত বাংলাদেশ দুতাবাস থেকে সত্তায়িত করাতে হবে। এর জন্য আপনাকে পোল্যান্ডে যেতে হবে।আবার এই সত্তায়িত পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট সহ ভিলনিয়াসে গিয়ে লিথুয়ানিয়ান একটি ননক্রিমিনাল এক্টিভিটিস প্রুফের ডকুমেন্টস নিতে হবে।
২.SKVC সার্টিফিকেট।
৩.কিছু ট্রান্সলেটেড ডকুমেন্টস ও ইউনিভার্সিটি কর্তৃক প্রদানকৃত ডকুমেন্ট।
৪.হেলথ ইন্সুরেন্স।
৫.ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
আবার ব্যাংক স্টেটমেন্ট কেন????? অনেকেই মনে মনে বলতেছে একবার কত ঝামেলা করে ব্যাংক স্টেটমেন্ট শো করলাম আবার ব্যাংক স্টেটমেন্ট কেন লাগবে!!!
কিন্তু ভাই লিথুয়ানিয়ান রুলস কিভাবে অমান্য করবেন? আপনাকে আবারও ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখাতে হবে। এইবার টাকার পরিমানটা ২৩০০ ইউরো। লিথুয়ানিয়ান একটি ব্যাংকে আপনার একাউন্ট এ এই টাকাটা রাখতে হবে এবং একটি স্টেটমেন্ট তুলতে হবে। এই স্টেটমেন্ট টাই আপনাকে প্রভাইড করতে হবে TRP আবেদনের সময়। টাকাটা আপনার একাউন্ট এ ২-৩ সপ্তাহ রাখতে হবে। আপনি চাইলে বাংলাদেশে আপনার একাউন্ট থেকে স্টেটমেন্ট টা নিতে পারবেন। ব্যাংক একাউন্ট চেক করা হতে পারে।
**প্রত্যেক বছরই যখন TRP এক্সটেন্সন এর জন্য আবেদন করবেন তখন আপনাকে ব্যাংক স্টেটমেন্ট প্রভাইড করতে হবে**
অনেকতো প্রসেসিং এর বয়ান দিলাম এইবার একটু গুরুত্বপূর্ন টপিকস নিয়ে আলোচনা করি।
টপিকস লিথুয়ানিয়ার পার্টটাইম কাজ ও কাজের সুযোগ সুবিধা…
লিথুয়ানিয়াতে কাজ করার জন্য অবশ্যই আপনার TRP থাকতে হবে। TRP ছাড়া আপনি লিথুয়ানিয়াতে কাজ করতে পারবেন না। লিথুয়ানিয়াতে লেখাপড়া চলাকালীন অবস্থায় আপনি সপ্তাহে ২০ ঘন্টা কাজের সুযোগ পাবেন এবং সামার ভেকেসনে ফুল টাইম কাজ করতে পারবেন।লিথুয়ানিয়াতে কাজ ততটা এভাইলেবল না ফরেইন স্টুডেন্টদের জন্য তবে আপনার যদি লিথুয়ানিয়ান ভাষার উপর কিছুটা দক্ষতা থাকে তবে আপনি কাজ পেতে পারেন। যেহেতু লিথুয়ানিয়াতে মাসিক লিভিংকস্ট ১১০-১৬০ ইউরো সেহেতু বুঝতে হবে আপনার মাসিক বেতন ৩০০-৪০০ ইউরো এর বেশি হওয়ার কথা না যদিও ব্যাতিক্রম থাকতে পারে। অনেকেই প্রশ্ন করে থাকে যে পার্টটাইম কাজ করে কি টিউশনফিস এবং লিভিংকস্ট ম্যনেজ করা যাবে কিনা?!!এই প্রশ্নের উত্তর টা একটু কম্পলিকেটেড কেননা লিথুয়ানিয়ার সার্বিক কাজের সুযোগ,বেতন,লিভিংকস্ট এবং টিউশনফি হিসেবে আপনি যদি জব পেয়েও থাকেন তাহলে বছর শেষে টিউশনফির কিছু অংশ ম্যানেজ করতে পারবেন তবে পুরোটা ম্যানেজ করা পসিবল না এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ফ্যামিলি থেকে সাপোর্ট নিতে হবে।
অনেক কঠিন কঠিন বিষয়ে কথা বলার পর আমার আর কঠিন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে ইচ্ছা করছেনা। অন্যরকম কি বিষয় নিয়ে কথা বলা যায়????
পাঠকরা মনে হয় বোরিং হয়ে যাচ্ছে এতো বড় লেখা পড়ে।
চলুন এইবার নজড় দেই লিথুয়ানিয়াতে সেটেলমেন্ট এর ব্যাপারে কি করতে হবে ওই দিকে…
অনেকে যখন বাংলাদেশ থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পড়াশোনা করতে আসেন তখন পড়াশুনা শেষ করে ইউরোপে সেটেল হতে চায়।
লিথুয়ানিয়াতে সেটেলমেন্ট এর প্রসঙ্গ:
আপনি লিথুয়ানিয়াতে আসার পর Temporary Residence Permit (TRP) পাবেন। লিথুয়ানিয়াতে পড়াশুনা শেষ হওয়ার পর আপনি ৬ মাসের জব সার্চিং ভিসা পাবেন। এই ৬ মাসের মধ্যে আপনি জব ম্যানেজ করতে পারলে আপনি ২ বছরের TRP পাবেন। ২ বছরের TRP শেষ হওয়ার পর আপনি Permanent Residence এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।লিথুয়ানিয়াতে ১০ বছর থাকার পর আপনি নাগরিকত্ব এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।
এই প্রসেডিউরগুলোর শুধুমাত্র সারাংশ করা হলো। এর মাঝে আরও অনেক পলিসি আছে যেইগুলেো সম্পর্কে জানার জন্য লিথুয়ানিয়ান ইমিগ্রেশনের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
অনেক বড় একটি লেখা ছিল এটি। চেস্টা করেছি লিথুয়ানিয়াতে পড়াশুনা সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য তুলে ধরার। হয়তবা এখনো অনেক তথ্যের অভাব রয়েছে এবং কিছু তথ্য নিয়ে কনফিউশন কাটেনি আপনাদের। বাংলিশ এবং হযবরল লেখার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত। টাইপিং মিস্টেকগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
লেখাশেষ করার আগে সবার কাছে একটা অনুরোধ দয়া করে কেউ লিথুয়ানিয়াকে ইউরোপে আসার গেটওয়ে হিসেবে ব্যবহার করবেন না যাতে এইখানে বাংলাদেশের সুনাম নস্ট হয় এবং পরবর্তীতে রিয়েল স্টুডেন্টসদের ভিসা পেতে যেন সমস্যা না হয়।
বিদায় আজকের জন্য বেচেঁ থাকলে ভবিষৎ এ নতুন লেখা নিয়ে হাজির হবো।
লেখক:আশফাক আহমেদ অমি
ক্লাইপেডা ইউনিভার্সিটি,
ক্লাইপেডা, লিথুয়ানিয়া
স্বেচ্ছাসেবক, বিএসসিই
ফেসবুক মন্তব্য
Mahedi Hasan
 
শেয়ার করুনঃ

Mahedi Hasan

স্বপ্নবাজ ও ভ্রমণপিপাসু একজন মানুষ। নতুন কিছু জানতে ও শিখতে ভালো লাগে। নিজে যা জানি তা সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। বর্তমানে জার্মানিতে পড়াশোনা করছি।আমার সম্পর্কেঃ http://www.hmahedi.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × three =

Upcoming Events