উচ্চশিক্ষায় স্পেন (সুদিপ মজুমদার)
স্পেনে যখন এপ্লাই করার কথা চিন্তা করি, তখন ম্যাক্সিমাম মানুষই আমাকে নিরুৎসাহিত করেছিলো। কারণ স্পেনের স্টুডেন্ড ভিসার রেসিও খুবই খুবই খারাপ। কিন্তু তারপরেও খানিকটা জেদের বশে Universitat Pompeu Fabra (UPF) তে মাস্টার্সের জন্য এপ্লাই করি। জেদের বশে কেন বলছি? আমার টার্গেট ছিলো নর্থ আমেরিকা, কিন্তু সামহাও কোথাও কিছু হচ্ছিলো না, ভাবলাম আমার বক্সের বাইরে থেকে চিন্তা ভাবনার সময় এসেছে, মন দিলাম ইউরোপের দিকে। বার্সেলোনার ইউপিএফ আর ইটালির University of Bologna তে এপ্লাই করি। ফলাফল দুই জায়গা থেকেই অফার লেটার চলে আসে। university of bologna এর মাস্টার্সের ব্যাপ্তিকাল ছিলো ২ বছর, আর ইউপিএফের ১ বছর। চিন্তা করলাম, এক বছর দেখতে দেখতে কেটে যাবে। এক্সেপ্ট করলাম তাদের অফার। আমি ইউপিএফে এপ্লাই করেছিলাম ২০১৭ এর মে মাসে, এপ্লিকেশান ডেডলাইনের একদম শেষ মুহূর্তে। আমাকে তারা মেইলে এডমিশান কনফার্ম করে জুলাইয়ের ১৮ তারিখ। রেগুলার পোস্টে তাদের এডমিশান লেটার বাসায় পৌছায় অগাস্টের মাঝামাঝি। স্পেনে যদি কেউ এপ্লাই করে থাকেন, তারা জানেন, এই এম্বাসির এপ্লিকেশান আর কাগজ পত্র নিয়ে ভালো ঝামেলা আর দৌড়াদৌড়ি পোহাতে হয়। আর আমি স্পেনের এপ্লিকেশানের ব্যাপারে প্রত্যেকটা জায়গায় আটকিয়েছিলাম। এম্বাসির ডেট পাওয়া থেকে শুরু করে, পুলিশ ভেরিফিকেশান (এইটা আমার দুই বার করতে হয়েছে এবং তাদের দোষেই প্রচুর ঝামেলা ফেস করা লাগছে) সব কিছুতেই কোনো এক অদৃশ্য শক্তি যেনো থামাতে চাইছিলো। আমি দমে যাই নি, দাতে দাত চেপে অফিসের পাশাপাশি কোনোরকম সময় ম্যানেজ করে সব পেপার্স রেডি করেছি। এন্ড ফাইনালি, সেপ্টেম্বরের ২৪ তারিখ ভিসা পাই এবং সেপ্টেম্বরের ২৯ তারিখ চলে আসি বার্সেলোনায়। ততোদিনে ক্লাস শুরু হয়ে গিয়েছে ১ সপ্তাহের মতোন।
যারা মনে করেন, কিসের পিছে ছুটছি, আদৌ কি সফল হবো, তাদের বলছি, সিরিয়াসলি চেষ্টা করুন, নিজে থেকে চেষ্টা করুন, কোনো শর্টকাট কিংবা এজেন্সির ধার ধারবেন না। সব কিছু ক্লিয়ারলি মেনশান করা থাকে কখন কি করতে হবে, জাস্ট ভালো করে পড়ে বুঝে এগিয়ে যান। অবশ্যই একদিন না একদিন সফল হবেন। এম্বাসিতে যেদিন ইন্টারভিউ হয় সেদিন মাদ্রিদের এক ভাই এসেছিলেন উনার পরিবারকে মাদ্রিদে নিয়ে যেতে চান এই উদ্দেশ্যে । উনিও আমাকে বললেন, স্পেনের ভিসার সম্ভাবনা খুবই কম, কারন ইউরোপে আমাদের বাংলাদেশীদের ইজ্জত আমরা নিজেরাই ডুবিয়েছি। অতীতে সবাই দালাল ধরে দুই নাম্বারী করে যেতে যেতে ওরা আমাদের উপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছে। ঘটনা বোধহয় সত্যি, কারণ আমি যেদিন পাসপোর্ট পাই সেদিন আমার সাথে আরো পাঁচজন স্টুডেন্ড ভিসার এপ্লিক্যান্ট ছিলেন। উনারা সবাই রিফিউজড হয়েছিলেন। পরিশেষে, এই গ্রুপের কাছে একটু কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। কারণ এপ্লিকেশানের বেসিক জিনিসপত্রের খোজ খবর আমি এই গ্রুপ থেকেই পেয়েছিলাম, যেইটা আমাকে অনেক সাহায্য করেছিলো।
সবাইকে ধন্যবাদ।
লেখকঃ সুদিপ মজুমদার
বার্সেলোনা, স্পেন
- চেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে সুপারলিগ্যালাইজেশন ও নস্ট্রিফিকেইশনঃ কি, কেন এবং কিভাবে? - January 16, 2022
- হাঙ্গেরিতে স্কলারশিপ ‘স্টাইপেন্ডিয়াম হাংগেরিকাম’ - November 18, 2020
- প্রবাস জীবনে রমজানের অনুভূতি! - April 24, 2020